রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল বললে কম বলা হবে। শেষ ভালো যার সব ভালো তার-এই আপ্তবাক্যের সার্থক রূপায়ণ দেখল এবারের বিপিএল ফাইনাল।
গত পরশু রাতে মিরপুরে অনুষ্ঠিত ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এক রানের মহানাটকীয় জয়ের মধ্যদিয়ে শেষ হলো এই টি ২০ টুর্নামেন্ট।
বিপিএলের রানার্সআপ ফরচুন বরিশালের কোচ খালেদ মাহমুদ এবং ঢাকার কোচ মিজানুর রহমান জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটারের খেলায় খুশি হতে পারেননি। বিপিএল নিয়ে কাটাছেঁড়া করলেন দুই কোচ-
‘হতাশ করেছে জাতীয় দলের কিছু ক্রিকেটার’
খালেদ মাহমুদ, কোচ ফরচুন বরিশাল
অভিজ্ঞরা ভালো করেছে। সাকিব, তামিম, মোস্তাফিজরা বিপিএলে দুর্দান্ত। আবার কিছু তরুণ ক্রিকেটার, যেমন মুনিম শাহরিয়ার, শুরুতে ভালো ব্যাটিং করেছে।
মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ডেথ ওভারে দারুণ বল করেছে। তানভির ইসলাম ছিল ধারাবাহিক। ইয়াসির আলী মিডল অর্ডারে ভালো কিছু ইনিংস খেলেছে।
এনামুল হক বিজয়ও ভালো কিছু ইনিংস খেলেছে। হতাশ হয়েছি জাতীয় দলে খেলা কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে।
তাদের নিয়ে আশা ছিল। বিপিএলে সুযোগটা তারা নিতে পারেনি।
টি ২০ ক্রিকেটে আগ্রাসী মনোভাব থাকতে হবে। সুনীল নারিনের মতো ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে খেলতে হবে।
আমাদের ক্রিকেটারদের টেকনিক, অনুশীলন কোনোটারই অভাব নেই। সমস্যা হলো মানসিক। তাদের বলা হয়, বোঝানো হয়, কিন্তু মাঠে গিয়ে সেটা না পারলে আমি কী করতে পারি।
প্রত্যেক ব্যাটারের আলাদা চিন্তা থাকা উচিত। ব্যাটিংয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে কাকে মারব, কোন বোলারের বিপক্ষে কিভাবে খেলব, অন্য পাশে কোন ব্যাটার আছে।
এসব দেখেই তো খেলতে হবে। এই ধরনের ম্যাচ (ফাইনাল) সম্পর্কে আমাদের ধারণা অনেক কম। ম্যাচ বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে।
কোচ দেখাতে পারবে, কিন্তু শিখতে হবে নিজেকেই। সাকিবকে কেউ শিখিয়ে দেয়নি। সাকিব সবসময় আগ্রাসী নেতৃত্ব দিতে পছন্দ করে।
আমি তার মতো অধিনায়ক পছন্দ করি। এই টুর্নামেন্টে সাকিবকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব করেছে সে।
‘পরিচর্যা করতে হবে নতুনদের’
মিজানুর রহমান, কোচ মিনিস্টার ঢাকা
বিপিএল এমন একটা টুর্নামেন্ট, যার জন্য আমরা সবাই অপেক্ষা করি। এখানে অনেককে দেখার সুযোগ থাকে।
ভারতে এক আইপিএল তাদের ক্রিকেটের ধরন বদলে দিয়েছে। ভয়ডরহীন ব্যাটিং শিখেছে ওরা। যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা মারতে পারে।
তারা বিশ্বক্রিকেটে ডমিনেট করছে। স্কিলে উন্নতি করার জন্য বিপিএল গুরুত্বপূর্ণ।
একটা টুর্নামেন্টের শুরুতে উইকেট পুরোপুরি প্রস্তুত থাকে না। পরে রান হয়। এবার তিন ভেন্যুতেই রান হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।
নতুনদের মধ্যে মাহমুদুল হাসানের কথা বলতে হয়। টেস্ট অভিষেক হয়েছে তার। টি ২০-তেও সে যে ভালো কিছু করতে পারে, সেটা দেখিয়েছে।
মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে নিয়ে বয়সভিত্তিক থেকেই আশা। তার মধ্যে পেস অলরাউন্ডারের অনেক কিছুই আছে।
মাশরাফি মুর্তজা কিংবা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের মতো সেও হয়তো জাতীয় দলকে অনেকদিন সার্ভিস দিতে পারবে।
ইনজুরির পর ফিরে সে এই টুর্নামেন্টে দারুণ করেছে। তানভির ইসলাম ভালো বোলিং করেছে।
নাহিদুল ইসলাম ভালো করেছে। মুনিম শাহরিয়ার দারুণ ব্যাটিং করেছে। তাদের পরিচর্যা করতে হবে।
নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ নাঈম, সৌম্য সরকারদের কাছ থেকে আরও ভালো কিছু আশা করেছিলাম।
বিশেষ করে শান্ত আমাদের ভবিষ্যতের খেলোয়াড়।