ডিজেল কিংবা সিএনজিচালিত কোনো ধরনের বাসই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যে পিছিয়ে ছিল না
সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগে বেশিরভাগ বাস শ্রমিকই যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বলে স্বীকার করেছে বাস মালিক সমিতি।
সমিতির প্রতিনিধিরা বলেন,যাত্রীদের কাছ থেকে যাতে সঠিক ভাড়া নেওয়া হয় সে বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বুধবার (১০ নভেম্বর) প্রেস কনফারেন্স করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অনেক যাত্রী জানান, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৫০%, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের।
দূরপাল্লার কোনো কোনো যাত্রী অভিযোগ করেছেন, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ২০০-৩০০ টাকা (প্রায় ৬০%) পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে বাসগুলো।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর গণপরিবহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭% ভাড়া বাড়িয়ে দেয় সরকার।
ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনে বাসে প্রতি কিলোমিটার ২.১৫ টাকা এবং মিনি বাসে ২.০৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। আর দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ধরা হয় ১.৮০ টাকা।
বর্ধিত এই ভাড়া কেবল ডিজেলচালিত যানবাহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাসে অভিযান চালান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মহাখালীসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিআরটিএ পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) সরোয়ার আলম। অভিযান চালিয়ে তিনি বাসগুলোকে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দিতে বাধ্য করেন।
এই বিআরটিএ কর্মকর্তা বলেন, “প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগের গুরুত্ব অনুযায়ী ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে।”
রাজধানীতে চলাচলকারী দেওয়ান পরিবহন এবং স্মার্ট উইনারের দুই যাত্রী বিআরটিএকে জানান, নূন্যতম ভাড়া ১০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও দুটি বাসই ২০ টাকার কম নিচ্ছিল না।
তারা আরও অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
এছাড়া, ডিজেল কিংবা সিএনজিচালিত কোনো ধরনের বাসই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যে পিছিয়ে ছিল না।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চট্টগ্রাম বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যা বলেন, গণপরিবহনে দুর্ভোগ কমাতে সমিতির নেতারা মঙ্গলবার বিআরটিএর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
উল্লেখ্য, এনায়েত উল্যা ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিরও সাধারণ সম্পাদক। তিনি আরও বলেন, উভয় সংগঠনের পক্ষ থেকেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, “অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকারের নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান এনায়েত উল্যা।