বৈধ ডিলারের সাইনবোর্ডে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা করার অভিযোগে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের অ্যান্টি ইলিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিম।
গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলেন, মো. হোসেন, লাল তন পাংখোয়া, আলী আকবর এবং আদিলুর রহমান সুজন। তাদের কাছ থেকে চারটি পিস্তল, একটি শটগান ও ৩০১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অস্ত্র উদ্ধার ও গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়।
সেখানে সিটিটিসির প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মো. হোসেন চট্টগ্রামে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসায়ী।
অস্ত্র বিক্রিতে সরকার অনুমোদিত ডিলার তিনি। কিন্তু এই সাইনবোর্ডের আড়ালে তিনি দীর্ঘ বছর ধরে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার করে আসছিলেন।
সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে অস্ত্র বিক্রি থেকে শুরু করে ভাড়াও দিচ্ছিলেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সন্ত্রাসী গ্রুপের হাতে অস্ত্র পৌঁছে দিতে এসে গত রোববার রাতে তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তারও হন তিনি।
মো. হোসেন বিভিন্ন জায়গা থেকে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর কাছে চড়া দামে বিক্রি করতেন।
বৈধ অস্ত্রের ডিলার হওয়ায় এই হোসেন অস্ত্রের বিভিন্ন পুরনো লাইসেন্স সংগ্রহ করতেন।
যারা বৈধ অস্ত্র আগে ব্যবহার করতেন এখন মারা গেছেন, যারা লাইসেন্স নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র আর ব্যবহার করেন না-এমন লোকদের কাছ থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করতেন।
এসব লাইসেন্সের বিপরীতে অস্ত্র কিনে তা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করতেন। তার কাছ থেকে জব্দ হওয়া শটগানটিও এই ধরনের একটি লাইসেন্সের বিপরীতে কেনা হয়েছিল।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, লালতন পাংখোয়ার বাড়ি রাঙ্গামাটির বরককলের সাইচালে। তিনি বড়কল এলাকার সাইচাল পাংখোয়া পাড়ার হেডম্যান ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে বরকল সীমান্তবর্তী মিজোরাম রাজ্য এবং বান্দরবনের মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে অস্ত্র-গুলি চোরাচালানে জড়িত এই ব্যক্তি।
তিনি হোসেনের বৈধ দোকানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পার্বত্য অঞ্চলসহ কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অবৈধভাবে বিক্রি করতেন।
গ্রেপ্তার অপর দুইজন আদিলুর রহমান সুজন ও আলী আকবর এই হোসেন ও লাল তন পাংখোয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে সন্ত্রাসীদের হাতে পৌঁছে দিতেন।
রাজধানীতে অস্ত্রের এত বড় চালান নিয়ে আসতে পারা নিরাপত্তার জন্য হুমকি কি না, এমন প্রশ্নে সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেপ্তার চারজন আলাদা আলাদাভাবে ঢাকায় ঢুকেন।
এরপর তারা যাত্রাবাড়ীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় মিলিত হয়েছেন। এই অস্ত্রগুলো কার হাতে যেত সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’