ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেফতার যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ও কাউন্সিলর মোমিনুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি।
এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন রোববার হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানই সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন ২৩২ কোটি সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচার হওয়া বিপুল এই অর্থ উদ্ধারে কাজ করছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
অর্থ পাচার নিয়ে দেওয়া প্রতিবেদনে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালিদ মাহমুদ ভুঁইয়া, এনামুল হক আরমান, রাজীব হোসেন রানা, নেত্রকোনার জামাল ভাটারা, কাউন্সিলর মোমিনুল হক সাঈদ, কুমিল্লার শাজাহান বাবলু, কুমিল্লার আওলাদ হোসেন ও চট্টগ্রামের নাজমুল আবেদীনের নামও রয়েছে।
এর আগে বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িতদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুন হক আরমান সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন ২৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯১ টাকা।
সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় খালিদ মাহমুদ ভুঁইয়ার পাচার করা অর্থের পরিমাণ ৮ কোটি ৮১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯৬ টাকা। রাজীব হোসেন রানা সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন ৮১ লাখ টাকা।
মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে মোমিনুল হক সাঈদের পাচার করা অর্থের পরিমাণ ২৪ কোটি ৯৯ লাখ ৮২ হাজার ৩৫৯ টাকা।
কুমিল্লার শাহজাহান বাবলু একা দুবাইয়ে পাচার করেছেন ২ কোটি ১০ লাখ টাকা।
চট্টগ্রামের নাজমুল আবেদীন দুবাইয়ে পাচার করেন ৪০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। কুমিল্লার শরিফুল ইসলাম সিঙ্গাপুরে পাচার করেন ৮৩ লাখ টাকা।
এ নিয়ে কথা হয় আমিন উদ্দিন মানিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, এর আগে বিদেশে কারা অর্থ পাচার করছে, তাদের বিষয়ে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিলেন।
এ বিষয়ে সিআইডির পক্ষ থেকে করা তালিকা পুলিশের আইজির মাধ্যমে আমাদের হাতে এসেছে। অ্যাফিডেভিটও করেছি।
শুনানির দিন ২১ অক্টোবরের পর প্রতিবেদনটি আদালতে দাখিল করা হবে।
প্রতিবেদনে ৮টি মামলায় বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও দুবাইয়ে অর্থ পাচারের কথা বলা হয়েছে।
পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ অনেক বেশি। টাকা উদ্ধারে পুলিশের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোয় চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।
এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের নাম-ঠিকানা এবং তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চান আদালত।
১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে পাচার করা অর্থ অবিলম্বে ফেরত আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়।
ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম খান ও অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস রিট করেন।